Top

অপারেশন সিঁদুর(Operation Sindoor): ২০২৫ সালে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের নতুন অধ্যায়

২০২৫ সালের মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়, যখন ভারত 'অপারেশন সিঁদুর' নামে একটি সামরিক অভিযান চালায়। এই অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। ভারতীয় সরকার দাবি করে, এই হামলাগুলি জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়বা সন্ত্রাসী সংগঠনের অবকাঠামো লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। এই অভিযানটি ২২ এপ্রিল, ২০২৫ সালে পহেলগামে হিন্দু পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে চালানো হয়, যেখানে ২৬ জন নিহত হন।


ভারতীয় বিমানবাহিনী রাফাল জেট ব্যবহার করে এই অভিযানে অংশ নেয়, যা মাত্র ২৩ মিনিট স্থায়ী ছিল। হামলার লক্ষ্যস্থলগুলির মধ্যে ছিল বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, তেহরা কালান, সিয়ালকোট, ভিম্বার, কোটলি এবং মুজাফফরাবাদ। ভারতীয় সরকার দাবি করে, এই হামলাগুলি সুনির্দিষ্ট ও সীমিত ছিল এবং পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনাগুলিকে লক্ষ্য করা হয়নি।

Operation sindoor
Operation sindoor 


পাকিস্তান এই হামলাকে "যুদ্ধের কাজ" বলে অভিহিত করে এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা দাবি করে, এই হামলায় অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যার মধ্যে শিশু ও মহিলাও ছিলেন। পাকিস্তান আরও দাবি করে, তারা ভারতীয় কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যদিও ভারত এই দাবি অস্বীকার করে।


এই সংঘর্ষের ফলে উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ভারত পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে এবং ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত করে। পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শিমলা চুক্তি স্থগিত করে, বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়।


আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন ও রাশিয়া উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানায় এবং কূটনৈতিক সমাধানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে।


'অপারেশন সিঁদুর' নামটি হিন্দু নারীদের সিঁথিতে ব্যবহৃত লাল সিঁদুরের প্রতীক থেকে নেওয়া হয়েছে, যা বিবাহিত অবস্থার চিহ্ন। পহেলগামের হামলায় শুধুমাত্র পুরুষদের লক্ষ্য করে হত্যা করা হয়েছিল, যার ফলে বহু নারী বিধবা হন। এই নামকরণ সেই ঘটনার প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রতিশোধের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।


এই সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের কাশ্মীর বিরোধের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। উভয় দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এখন সময়ের দাবি।